মাসায়িল শিখি ::::: জুন – ’১২

 

শরয়ী দলীলে

পুরুষ ও মহিলার

নামাযের পদ্ধতি

সুমাইয়া ইয়াসমিন তামান্না

 

 

সৃষ্টিগতভাবে পুরুষ ও মহিলা মানুষ হিসেবে সমান। এ ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোনো তারতম্য নেই। তবে দৈহিক গঠন, সক্ষমতা, যোগ্যতা, সতর, পর্দাসহ বেশ কিছু বিষয়ে তাদের মাঝে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে।

পার্থক্যের এ দিকটি বাহ্যিক জীবনযাপনের মতোই ইবাদতের মধ্যেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে রয়েছে। পদ্ধতিগত পার্থক্য বিদ্যমান থাকার মধ্যে অন্যতম একটি ইবাদত হলো নামায।

নামাযে হাত তোলায় পুরুষ কান পর্যন্ত এবং মহিলা কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলেন। পুরুষ নাভীর নীচে এবং মহিলা বুকের উপর হাত বাঁধেন। পুরুষ মাথা সটান করে ঝুঁকিয়ে হাত দ্বারা হাঁটু চেপে ধরে রুকু করেন, আর মহিলা মাথা কিছুটা ঝুঁকিয়ে হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছিয়ে রুকু করেন। পুরুষ কনুই, পাছা ইত্যাদি জমিন থেকে আলাদা এবং পেট উরু থেকে পৃথক রেখে সিজদা করেন, অপরদিকে মহিলা কনুইসহ হাত বিছিয়ে পাছাসহ শরীর  মাটির সাথে মিশিয়ে এবং পেটকে উরুর সাথে মিলিয়ে জড়সড় হয়ে সিজদা করেন।  বৈঠকে পুরুষ ডান পা খাড়া রেখে বাম পায়ের ওপর বসেন এবং মহিলা উভয় পা ডানদিক দিয়ে বের করে এবং ডান উরুকে বাম উরুর উপর রেখে জমিনের উপর বসেন। প্রভৃতি বিভিন্ন পার্থক্য পুরুষ ও মহিলার নামাযের মধ্যে প্রত্যক্ষ করা যায়।

পুরুষ ও মহিলার নামাযের এ পার্থক্য সুন্নাহ, আছার ও ইজমার দ্বারা প্রমাণিত। এতদসত্ত্বেও গ্রহণযোগ্য কোনো দলীল ও যুক্তির ওপর নির্ভর না করেই কিছু মহলের পক্ষ থেকে এই পার্থক্য অস্বীকার করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে দলীলভিত্তিক কিছু আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি।

হাদীস শরীফের আলোকে

হাদীস – ১

 

 

 

 

 

“তাবেয়ী ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব (রহ.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে বললেন, “যখন সিজদা করবে, তখন শরীর জমিনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা, মহিলারা এক্ষেত্রে পুরুষদের মতো নয়।” (কিতাবুল মারাসিল, ইমাম আবু দাউদ – ৫৫, হাদীস নং ৮০)

প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আওনুল বারী’তে লিখেছেন, “উল্লিখিত হাদীসটি সকল ইমামের উসূল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করার যোগ্য।”

(আওনুল বারী, ১ম খ-, ৫২০ পৃষ্ঠা)

মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী ‘সুবুলুস সালাম শরহু বুলুগিল মারাম’ গ্রন্থে এই হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করে পুরুষ ও মহিলার সিজদার পার্থক্য বর্ণনা করেছেন।

(বুলুগুল মারাম, ১ম খ-, ৩৫১-৩৫২ পৃষ্ঠা)

হাদীস  – ২

 

 

 

 

 

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে, তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সিজদা করবে, তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তা‘আলা তাকে দেখে বলেন, ওহে আমার ফেরেশতারা! তোমরা সাক্ষী থেকো, আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম।”

(সুনানে কুবরা – বাইহাকী, ২য় খ-, ২২৩ পৃষ্ঠা) এটি হাসান হাদীস।

হাদীস – ৩

 

 

 

 

 

হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে হাজির হলাম। তিনি আমাকে (অনেক কথার মাঝে একথাও) বললেন, “হে ওয়াইল ইবনে হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে, তখন কান বরাবর হাত উঠাবে। আর মহিলারা হাত উঠাবে বুক বরাবর (হাতের মাথা কাঁধ বরাবর থাকবে)।” (আল-মু‘জামুল কাবীর – তাবরানী ২২/২৭২) এ হাদীসটিও হাসান।

এ ছাড়াও এসব হাদীসের সমর্থনে মহিলাদের নামাযের পদ্ধতির পার্থক্য ও ভিন্নতাকে নির্দেশ করে এমন আরো কিছু হাদীস রয়েছে। পক্ষান্তরে এগুলোর সাথে বিরোধপূর্ণ একটি হাদীসও পাওয়া যায় না, যাতে বলা হয়েছে যে, পুরুষ ও মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতিতে কোনো পার্থক্য নেই বা উভয়ের নামাযই একরকম।

সাহাবায়ে কিরামের বক্তব্যের আলোকে

 

 

তাবেয়ী হারেস (রহ.) হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, হযরত আলী (রা.) বলেন, “মহিলা যখন সিজদা করবে, তখন সে যেন খুব জড়সড় হয়ে সিজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সাথে মিলিয়ে রাখে।”

(মুসান্নাফ – আবদুর রাযযাক, ৩য় খ-, ১৩৮ পৃষ্ঠা/ সুনানে কুবরা – বাইহাকী, ২য় খ-, ২২২ পৃষ্ঠা)

 

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)কে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, মহিলা কিভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন, “খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে।” (মুসান্নাফ – ইবনে আবী শাইবা, ১ম খ-, ৩০২ পৃষ্ঠা)

এখানে খলীফায়ে রাশেদ হযরত আলী (রা.) ও ফকীহুল উম্মাহ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কওল বর্ণনা করা হলো। এ দু’জন সাহাবী মহিলাদের নামাযের যে পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন, কোনো হাদীসের কিতাবে একজন সাহাবী থেকেও এর বিপরীত কিছু বিদ্যমান নেই।

তাবেয়ীগণের বক্তব্যের আলোকে

১। প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হযরত আতা ইবনে আবী রবাহ (রহ.) ছিলেন মক্কাবাসীদের ইমাম। তাঁর বক্তব্য সম্পর্কে ইমাম ইবনে আবী শাইবা (রহ.) বর্ণনা করেন, হযরত আতা ইবনে আবী রবাহ (রহ.)কে জিজ্ঞাসা করা হলো, নামাযে মহিলা কতটুকু হাত উঠাবে? জবাবে তিনি বললেন, বুক বরাবর (যাতে হাতের আঙ্গুলগুলো কাঁধ বরাবর হয়)।”

(মুসান্নাফ – ইবনে আবী শাইবা, ১ম খ-, ২৭০ পৃষ্ঠা)

২। মক্কাবাসীদের আরেক ইমাম হযরত মুজাহিদ ইবনে জাবর (রহ.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে ইবনে আবী শাইবা (রহ.) বর্ণনা করেন, “হযরত মুজাহিদ ইবনে জাবর (রহ.) পুরুষদের জন্য মহিলাদের মতো উরুর সাথে পেট লাগিয়ে সিজদা করাকে অপছন্দ করতেন।”

(মুসান্নাফ – ইবনে আবী শাইবা, ১ম খ-, ৩০২ পৃষ্ঠা)

৩। ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী (রহ.) মদীনাবাসীদের ইমাম ছিলেন। তাঁর কওল বর্ণনা করে ইবনে আবী শাইবা (রহ.) বলেন, যুহরী (রহ.) বলেন, “মহিলারা কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাবে।”

(মুসান্নাফ – ইবনে আবী শাইবা, ১ম খ-, ২৭০ পৃষ্ঠা)

৪। হযরত হাসান বসরী (রহ.) ও হযরত কাতাদাহ ইবনে দি‘আমা (রহ.) বসরাবাসীদের ইমাম ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য বর্ণনা করে আবদুর রাযযাক ও ইবনে আবী শাইবা (রহ.) বলেন, হযরত হাসান বসরী ও হযরত কাতাদা (রহ.) বলেন, “মহিলারা যখন সিজদা করবে, তখন তারা যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা রেখে সিজদা করবে না। যাতে কোমর উঁচু হয়ে না থাকে।”

(মুসান্নাফ – আবদুর রাযযাক, ৩য় খ-, ১৩৭ পৃষ্ঠা/ মুসান্নাফ – ইবনে আবী শাইবা, ১ম খ-, ৩০৩ পৃষ্ঠা)

৫। কুফাবাসীদের ইমাম হযরত ইবরাহীম নাখায়ী (রহ.) এ সম্পর্কে বলেন, “মহিলাদের আদেশ করা হত, তারা যেন সিজদা অবস্থায় হাত ও পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে, পুরুষদের মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা না রাখে। যাতে কোমর উঁচু হয়ে না থাকে।”

(মুসান্নাফ – আবদুর রাযযাক ,৩য় খ-, ১৩৭ পৃষ্ঠা)

পূর্বোক্ত বর্ণনাগুলো ছাড়াও আয়িম্মায়ে তাবেয়ীগণের আরো কিছু বর্ণনা রয়েছে, যারা সাহাবায়ে কিরাম (রা.) থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরবর্তীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তাদের প্রত্যেকেরই বর্ণনা দ্বারা পুরুষ-মহিলার নামাযের পাথর্ক্য প্রমাণিত হয়।

চার ইমামের ফিকহের আলোকে

ফিকহে হানাফী :

১। ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর অন্যতম প্রধান শাগরেদ ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) বলেন, “আমাদের নিকট মহিলাদের নামাযে বসার পছন্দনীয় পদ্ধতি হলো, উভয় পা একপাশে মিলিয়ে রাখবে, পুরুষের মতো এক পা দাঁড় করিয়ে রাখবে না।”

(কিতাবুল আসার – ইমাম মুহাম্মদ, ১ম খ-, ৬০৯ পৃষ্ঠা)

২। মুহাদ্দিস আবুল ওয়াফা আফগানী (রহ.) কিতাবুল আসার-এর ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেন – “আমাদের ইমামে আযম হযরত ইমাম আবু হানীফা (রহ.) নাফে (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন –

 

 

 

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রহ.)কে প্রশ্ন করা হলো, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মহিলারা কিভাবে নামায পড়তেন? তিনি বললেন, “আগে তারা চারজানু হয়ে বসতেন। পরে তাদেরকে জড়সড় হয়ে বসতে বলা হয়েছে।” (জামি‘উল মাসানিদ, ১ম খ-, ৪০০ পৃষ্ঠা)

মুহাদ্দিস আবুল ওয়াফা আফগানী (রহ.) এ হাদীস সম্পর্কে লিখেছেন, “উক্ত হাদীসটি এ বিষয়ে সর্বাধিক শক্তিশালী। এ কারণেই আমাদের ইমাম এর দ্বারা দলীল পেশ করেছেন, এ অনুযায়ী আমল করেছেন এবং এটিকে মাযহাব বানিয়ে নিয়েছেন। (কিতাবুল আসার (টীকা), ১ম খ-, ৬০৭ পৃষ্ঠা)

 

ফিকহে মালেকী :

মালেকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফকীহ ইমাম আবুল আব্বাস আল-কারাফী (রহ.) বলেন, “নামাযে মহিলা পুরুষের মতো কিনা এ নিয়ে ইমাম মালেক (রহ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, মহিলা ডান উরু বাম উরুর উপর রাখবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে বসবে। রুকু, সিজদা ও বৈঠক কোনো সময়ই ফাঁক ফাঁক হয়ে বসবে না। পক্ষান্তরে পুরুষের পদ্ধতি ভিন্ন।”

(যাখীরা – ইমাম কারাফী, ২য় খ-, ১৯৩ পৃষ্ঠা)

 

ফিকহে শাফেয়ী :

ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদেরকে পুরোপুরি আবৃত থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। আর তাঁর রাসূলও অনুরূপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দনীয় হলো, সিজদা অবস্থায় মহিলারা এক অঙ্গের সাথে অপর অঙ্গকে মিলিয়ে রাখবে; পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখবে এবং সিজদা এমনভাবে করবে, যাতে সতরের চূড়ান্ত হিফাজত হয়। অনুরূপ রুকু, বৈঠক ও গোটা নামাযে এমনভাবে থাকবে, যাতে সতরের পুরোপুরি হিফাজত হয়।

(কিতাবুল উম্ম – শাফেয়ী,  ১ম খ-, ১৩৮ পৃষ্ঠা)

ফিকহে হাম্বলী :

ইমাম ইবনে কুদামা মাকদিসী আল হাম্বলী (রহ.) স্বীয় রচিত ‘আল মুকনী’ কিতাবে পুরুষের নামাযের পদ্ধতি উল্লেখ করার পর বলেন, “এসব ক্ষেত্রে মহিলার হুকুম পুরুষের মতোই। তবে মহিলা রুকু ও সিজদায় নিজেকে গুটিয়ে রাখবে। অনুরূপ নামাযের অন্যান্য রুকনেরও এই হুকুম। এতে কারো দ্বিমত নেই। মহিলা চারজানু হয়ে বসবে কিংবা উভয় পা এক সাথে করে ডান পাশ দিয়ে বের করে দিবে।”

(আল-মুকনী, ২য় খ-, ৯০ পৃষ্ঠা)

উপরোক্ত বক্তব্য উল্লেখ করে আল্লামা মারদাভী (রহ.) বলেন, ইমাম আহমদ থেকে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে যে, “মহিলাদের জন্য উভয় পা ডান দিক দিয়ে বের করে বসাই উত্তম।”

(আল-ইনসাফ ফী মা‘রিফাতির রাজিহি মিনাল খিলাফ – আল্লামা মারদাভী (রহ.), ২য় খ-, ৯০ পৃষ্ঠা)

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে এ কথা স্পষ্ট হলো যে, ফিকহে ইসলামীর অধিক প্রচলিত চারটি ধারা ফিকহে হানাফী, ফিকহে মালেকী, ফিকহে হাম্বলী ও ফিকহে শাফেয়ী এই চার ফিকহের ইমামদের মাঝে বিভিন্ন মাসআলায় দলীল ভিত্তিক ইখতিলাফ থাকলেও মহিলাদের নামাযের পদ্ধতিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে ভিন্নতার ব্যাপারে তাদের ভাষ্য ও বক্তব্য এক।

গাইরে মুকাল্লিদ আলেমগণের ফাতওয়া

যারা পুরুষ-মহিলার নামাযের পদ্ধতির বিষয়টিকে উপেক্ষা করেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন গাইরে মুকাল্লিদরা। তাদের এক আলেম নাসিরুদ্দীন আলবানী তার ‘সিফাতুস সালাত’ গ্রন্থে লিখেছেন, “পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতি একই।” অথচ তিনি এই দাবীর স্বপক্ষে না কোনো আয়াত কিংবা না কোনো হাদীস পেশ করেছেন। আর না কোনো সাহাবী বা তাবেয়ীর বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। বরং তিনি মহিলার নামাযের পার্থ্যক্যের সমর্থনে তাবেয়ী ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব (রহ.)-এর বর্ণিত হাদীসকে (যা বক্ষমান নিবন্ধের প্রথমেই বর্ণিত হয়েছে) ‘মুরসাল’ আখ্যা দিয়ে মহিলাদের নামাযের পার্থক্যকে অস্বীকার করেছেন। অথচ গাইরে মুকাল্লিদদেরই বিখ্যাত আলেম ও মুহাদ্দিস নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান ওই হাদীস সম্পর্কে ‘আউনুল বারী’ ১ম খ-, ৫২০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “এই মুরসাল হাদীসটি সকল ইমামের উসূল ও মূলনীতি অনুযায়ী দলীল হওয়ার যোগ্য।”

তাদেরই আরেক আলেম মুহাম্মদ দাউদ গজনবী (রহ.)-এর পিতা আল্লামা আবদুল জব্বার গজনবী (রহ.)কে জিজ্ঞেস করা হলো, মহিলাদের নামাযে জড়সড় হয়ে থাকা কি উচিত? জবাবে তিনি একটি হাদীস উল্লেখ করে বলেন, “এর উপরই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের চার মাযহাব ও অন্যান্যদের আমল চলে আসছে।” তিনি আরো বলেন – “এর অস্বীকারকারীরা হাদীসের কিতাবসমূহ ও উম্মতের সর্বসম্মত আমল সম্পর্কে বেখবর ও অজ্ঞ।” (ফাতাওয়া গজনবিয়্যা, ২৭ – ২৮ পৃষ্ঠা, ফাতাওয়া উলামায়ে আহলে হাদীস, ৩ খ-, ১৪৮ – ১৪৯ পৃষ্ঠা)

এছাড়াও গাইরে মুকাল্লিদদের অনেক আলেম পুরুষ-মহিলাদের নামাযের পার্থক্যকে স্বীকার করেছেন। যা এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কিতাবাদিতে পাওয়া যাবে।

পুরুষ-মহিলার নামাযের পদ্ধতির পার্থক্য সম্পর্কে শরয়ী দলীলের আলোকে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা সকলকে সেগুলো বোঝার এবং মানার তাওফীক দান করুন। (আমীন।)

 

Related posts

14 Thoughts to “মাসায়িল শিখি ::::: জুন – ’১২

  1. মো:বাবলো খান,শামগঞ্জ বড় মসজিদ মাদরাসা,মোমেনশাহী

    আজকে মাসের ৩০ তবুও আমি এ মাসের আদর্শ নারী পেলাম না মনে অনেক কষ্ট নিয়ে আদর্শ নারীর পরিবারকে প্রস্তাব জানালাম পত্রিকা মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশের করার জন্ন !মাসিক আদর্শ নারীর ওয়েব তৈরির জন্ন মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শোকরিয়া (আলহামদুলিল্লাহ)। বাবলো খান সবুজ কুড়ির নং ১৩১০৯ মোমেনশাহী

  2. রমজান এবং অন্নান্য কিছু কাজের চাপের কারনে আমরা আমাদের ওয়েব-সাইট টি সাময়িক ভাবে আপডেট করতে পারছি না, তবে ইনশাআল্লাহ্‌ ঈদের পর থেকে নিয়মিত আপডেট করা হবে। ঠিক একই কারনে আপনার মন্তব্যের উত্তর দেওয়া হল না, দুঃখিত।

  3. Md. Ileas Khan

    Assalamu Alaikum,

    Many Many Thanks for this jobs. At present many muslim did not know Masayel. They should get help from this side.

    1. রমজান এবং অন্নান্য কিছু কাজের চাপের কারনে আমরা আমাদের ওয়েব-সাইট টি সাময়িক ভাবে আপডেট করতে পারছি না, তবে ইনশাআল্লাহ্‌ ঈদের পর থেকে নিয়মিত আপডেট করা হবে।

      ঠিক একই কারনে আপনার মন্তব্যের উত্তর দেওয়া হল না, দুঃখিত।

  4. anwar

    2/1 TA udahoron ki sohi bukari muslime naie

  5. hafej abdurrahim

    khubi sundor lekha.jajakallah

  6. kamrul islam

    Je hadis gulu apni likhese se gulu jal othoba joif.

  7. nusrat

    Akta vdo dekhte parle khub upokar hoto

  8. nahid

    Do you any authentic hadidt to support this opinion.

  9. রাজু

    সুনান আবু দাউদ এ তো ৪১ অধ্যায় পর্যন্ত পেলাম। ৫৫ অধ্যায় কোথায় ??

  10. abdul kaiyum

    allahor rasul (s)k j din zjbrial salath sikhalen tokhon mohilader salath vinno koray daykhasen? er dolil ditay parben? pls apni quran o sohi hadis er upor gibon k gorar chesta korun pls pls .abdul kaiyum.italy

  11. jahid

    alhumdulillah onek sondor lehka- ahale fetnar birodde a rokom hajar post dorkar karon tader kolom theme ney ummoth ka jaahanname neowar jonno——

  12. Atik

    লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো। আমাদের এটাই প্রয়োজন। গবেষণার মধ্য দিয়ে সঠিক বিষয় প্রকাশ করা এখন সময়ের দাবী। ধন্যবাদ।

Leave a Comment